প্রবল আন্দোলনের মুখে গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আটই অগাস্ট ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর ষোলই অগাস্ট উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন আলী ইমাম মজুমদারসহ চার জন। সর্বশেষ রোববার আরও তিন জন শপথ নেয়ায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এখন ২৪ জন।
তবে উপদেষ্টারা একেকজন একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকায় বাণিজ্য, খাদ্য, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন উঠছিলো শুরু থেকেই।
এর মধ্যেই দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে এসব মন্ত্রণালয়গুলো কতটা দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারছে তা নিয়েও আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
ঢাকায় আজ এক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা নিয়োগের কারণ জানাতে গিয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে মানুষের প্রত্যাশাকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
“আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে, জিনিসপত্রের দামের বিষয়ে মানুষের প্রত্যাশা আছে। এগুলো বিবেচনা করা হয়েছে,” বলছিলেন তিনি।
এর আগে, সরকারের শুরুতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন সাখাওয়াত হোসেন। পরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শপথ নেয়ার পর তাকে এই মন্ত্রণালয় দেয়া হয়।
এখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর হাতে কৃষি মন্ত্রণালয় থাকলেও- দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় এক সাথে সামাল দেয়া কঠিন হয়ে উঠছিলো বলে মনে হচ্ছিলো অনেকের কাছে। এখনো তার হাতে দুটি মন্ত্রণালয়ই রাখা আছে।
যদিও নতুন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে এখনো কোনো দপ্তর দেয়া হয়নি।
অন্যদিকে উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদের হাতে একই সাথে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছিল। সম্প্রতি দ্রব্যমূল্য ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না বলেও অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ রবিবার শেখ বশিরউদ্দীন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর তাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি একই সাথে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পেয়েছেন, যা আগে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেনের হাতে ছিল।
মি. হোসেনকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যা আগে আসিফ মাহমুদের হাতে ছিল। মি. মাহমুদ এখন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় দেখবেন।
আইন মন্ত্রণালয় ছাড়াও প্রবাসী ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন আসিফ নজরুল। নতুন উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে।
এদিকে, উপদেষ্টা হওয়ার প্রায় আড়াই মাস পর মন্ত্রণালয় পেলেন আলী ইমাম মজুমদার। তাকে দেয়া হয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। বাজার পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে এ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।-বিবিসি বাংলা
Leave a Reply