সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক সহযোগিতা ও ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় শুক্রবার (২০/১২/২০২৪) সকালে ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে ১১ জন থ্যালাসেমিয়া রোগীদের মাঝে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (হেমাটোলজি) ডাঃ গাজী ইয়াসানুল হক চেক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে থ্যালাসেমীয়া রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, যে কোন রোগই প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। তিনি ইরানের উদাহরণ টেনে বলেন এক সময় ইরানে থ্যালাসেমিয়ার রোগীর সংখ্যা আশঙ্কা জনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সে দেশের সরকার আইন করে বিবাহ পূর্বে ইলেকট্রোফোরেসিস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেন।আর এই আইন প্রয়োগ করার ফলে থ্যালাসেমিয়া বাহকদের মাঝে বিবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে এর সুফল ভোগ করতে থাকে সে দেশের জনগণ। এ ছাড়া তিনি আরও বলেন একটু সচেতন হলেই থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। যদি স্বামী-স্ত্রী দুজনই থ্যালাসেমিয়া বাহক বা একজন থ্যালাসেমিয়া বাহক এবং একজন হিমোগ্লোবিন ই এর বাহক হয় তবে প্রতি গর্ভাবস্থায়
এ রোগে আক্রান্ত শিশু জন্ম নেয়ার সম্ভাবনা থাকে শতকরা ২৫ ভাগ। বাহক শিশু জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে শতকরা ৫০ভাগ।আর সুস্থ শিশু জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে শতকরা ২৫ ভাগস্ব মীস্বামী স্ত্রী দুজনের যেকোনো একজন যদি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকেন, তাহলে নবজাতকের থ্যালাসেমিয়া হবার কোন সম্ভাবনা থাকে না। তবে নবজাতক থ্যালাসেমিয়ার বাহক হতে পারে যা কোন রোগ নয়।তাই এ রোগের বাহকদের মধ্যে বিয়ে নিরুৎসাহিত এবং প্রতিহত করার মাধ্যমে সমাজে নতুন থ্যালাসেমিয়া শিশুর জন্ম হ্রাস করা যায়। সুতরাং, দেরি না করে আজই থ্যালাসেমিয়া নির্ণয় এর জন্য হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামক পরীক্ষাটি করান এবং আপনার শিশুকে এর অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখুন। এছাড়া ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ যেসব পরিবারে স্বামী ও স্ত্রী দুজনই এ রোগের বাহক অথবা যাদের এক বা একাধিক থ্যালাসেমিক শিশু আছে তারা গর্ভস্থ ভ্রুণ পরীক্ষার মাধ্যমে সম্ভাব্য থ্যালাসেমিক শিশু নির্ণয় এবং তা পরিহার (গর্ভপাত) করতে পারেন। গর্ভাবস্থার ১৬ থেকে ১৮ সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষাটি করালে ভালো হয়।
উল্লেখ্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১০০ জন রোগীর জন্য ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৫০ লাখ টাকা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে থ্যালাসেমিয়া হাসপাতালকে অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এই অর্থ বিভিন্ন তারিখে রোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ৮ নভেম্বর ৬৫ জন, ২২ নভেম্বর ১৮ জন, ২৯ নভেম্বর ৬ জন,২০ ডিসেম্বর ১১ জনসহ সর্বমোট ১০০ জন।
বিভিন্ন তারিখের চেক বিতরন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা কে এম শহিদুজ্জামান, আইএসিআইবি পরিচালক ফাইলেরিয়া ও জেনারেল থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাক্তার মোয়াজ্জেম হোসেন , ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল এন্ড ইনস্টিটিউটের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সৌরদ্বীপ মন্ডল, আইএসিআইবি মেডিক্যাল অফিসার থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল এন্ড ইনস্টিটিউট ডাঃ ফারজানা চৌধুরী ইভাসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
Leave a Reply